![image_750x_5eba68dad4dde](https://allcrimes.tv/wp-content/uploads/2020/05/image_750x_5eba68dad4dde.jpg)
দুই দিন পর পদ্মায় জাল ফেলে আশায় বসে ছিলেন জেলে হারুন শেখ। প্রায় চার ঘণ্টা পর জাল তুলতে গেলেই বড় ঝাঁকুনি লাগে। বুঝতে পারেন, জালে বড় কোনো মাছ আটকা পড়েছে। ঠিক তা-ই। জাল টেনে নৌকায় তোলার আগেই সবার চোখে পড়ে বিশাল আকারের কাতল মাছ।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার চর করনেশনা এলাকার পদ্মা নদীতে কাতল মাছটি ধরা পড়ে। মাছটির ওজন প্রায় ৩০ কেজি। পরে মাছটি বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে গেলে ১ হাজার ৩৫০ টাকা কেজি দরে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তবে সম্পূর্ণ টাকা জেলে হারুন এখনো পাননি। কিনে নেন দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মৎস্য আড়তদার চান্দু মোল্লা। এই মৌসুমে এত বড় মাছ এটিই প্রথম।
আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটসংলগ্ন মৎস্য আড়তে মাছটি দেখতে মানুষ ভিড় করেন। মাছটি তখন ঢাকায় বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আড়তদার চান্দু মোল্লা।
এ সময় মাছ বিক্রেতা জেলে হারুন শেখ বলেন, ‘জেলের সংখ্যা বেশি বলে আমরা সমিতির মাধ্যমে দুই দিন পরপর নদীতে গ্রুপ আকারে মাছ ধরতে নামি। দুই দিন পর গতকাল রাত একটার দিকে পদ্মার চর করনেশনা এলাকায় নামি। আমিসহ মোট ভাগীদার সাতজন মিলেই নদীতে ফাসন জাল (বড় মাছ ধরার জাল) ফেলি। প্রায় চার ঘণ্টা পর ভাসতে ভাসতে আরও ভাটিতে যাওয়ার পর ভোর পাঁচটার দিকে জাল টেনে নৌকায় তোলা শুরু করি। জাল তোলা প্রায় শেষের দিকে, তখন বড় একটা ঝাঁকুনি দেয়। তখনই বুঝতে পারি, বড় কিছু একটা আটকেছে। হালকা ভোরের আলোয় ঝাপসা চোখে জাল টেনে নৌকায় তোলা শেষের দিকে হওয়ায় তখন দেখি ঘাইলের (বিশেষ ফাঁদ) ঘাপটি মেরে বিশাল এক কাতল আটকে আছে। সবার চোখ–মুখ তখন খুশিতে আটখানা। সবাই মিলে মাছটি টেনে তুলেই সরাসরি চলে আসি দৌলতদিয়া ঘাট মাছবাজারে। স্থানীয় আড়তদার রওশন মোল্লার ঘরে প্রতি কেজি ১ হাজার ৩৫০ টাকা করে ডাক উঠলে মাছটি ফেরিঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা কিনে নেন। প্রায় সাত বছর আগে এই নদী থেকে প্রায় ৬৩ কেজি ওজনের একটি বাগাড় মাছ ধরেছিলাম। এরপর এই প্রথম এত বড় কাতল মাছ ধরা পড়ল।’
বিশাল কাতল হাতে হারুন শেখ (মাঝে)। বাঁয়ে মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মিয়া মাছটি কিনে নেন। সকালে চান্দু মোল্লার মাছের আড়তে। ছবি: প্রথম আলো
বিশাল কাতল হাতে হারুন শেখ (মাঝে)। বাঁয়ে মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মিয়া মাছটি কিনে নেন। সকালে চান্দু মোল্লার মাছের আড়তে। ছবি: প্রথম আলো
মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ২২ কেজি ওজনের একটি কাতল মাছ কিনেছিলাম। এ ছাড়া এই মৌসুমে মাঝেমধ্যে ৮-১০ কেজি ওজনের কাতল, পাঙাশ মাছ ধরা পড়ে। কিন্তু প্রায় ৩০ কেজি ওজনের এত বড় কাতল মাছ আমার বয়সে এই প্রথম প্রায় ৪০ হাজার টাকায় কিনলাম।’
চান্দু আরও বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ সাধারণত এত বড় মাছ কেনে না। ঢাকাসহ দূরদূরান্তের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক বা রাজনৈতিক নেতা কিনে নেন। ঢাকার বিভিন্ন পরিচিতজনদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছেন। এক ব্যবসায়ী ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি করে দাম করছেন। ১ হাজার ৪০০ টাকা করে হলে তিনি বিক্রি করে দেবেন।