বিশেষ প্রতিবেদক
বেসরকারী টেলিভিশন আরটিভির নরসিংদী প্রতিনিধি ও নরসিংদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ মোর্শেদ শাহরিয়ার সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে দেহ ব্যবসা করানোর হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বসাবসরত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী এই ছাত্রী মঙ্গলবার (২ জুন) খিলগাঁও থানায় লিখিতভাবে এই অভিযোগ দায়ের করেছে।
এদিকে তিনদিন আগে অভিযোগ জমা দিলেও প্রাথমিক তদন্ত করার কথা বলে পুলিশ এখনো মামলা রেকর্ড করেনি।
এই বিষয়ে খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমানের সাথে বুধবার রাতে যোগাযোগ করা হয় অল ক্রাইমস টিভির পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন,“ আগের লিখিত অভিযোগটি সংশোধন করা হয়েছে। মামলার বিষয়ে আজ সিদ্বান্ত হবে।”
মোঃ মোর্শেদ শাহরিয়ার আরটিভির পাশাপাশি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার নরসিংদী প্রতিনিধি হিসাবেও কাজ করে।
নরসিংদীর প্রভাবশালী এই সাংবাদিক নেতার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ে, আটকে রেখে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগও করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত মোর্শেদ শাহরিয়ার ঠিকাদারী ব্যবসার পাশাপাশি সাংবাদিকতায়ও জড়িত। থানায় লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, একই এলাকায় বাড়ি হওয়ার সুবাদে অভিযুক্ত মোর্শেদ শাহরিয়ারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
২০১৭ সালে যোগাযোগ হয় ফেসবুকে। সেখানেই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মোর্শেদ শাহরিয়ার ওই শিক্ষার্থীকে প্রাইভেটকারে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে তার বাড়ির কাছে একটি হোটেলে নামিয়ে দেয়। এক সপ্তাহ পর কৌশলে তাকে সিলেটে নিয়ে যায়। ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে মেলামেশা করে এবং বিভিন্ন স্থানে নিয়ে রাত যাপন করে।
২৩ মার্চ তাকে একটি কাজী অফিসে ৫ হাজার টাকা দেনমোহর উল্লেখ করে বিয়ে করে। বিয়ের পর তাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ ও হুমকি দিতে থাকে। ডিভোর্স না দিলে দেহব্যবসা করতে বাধ্য করবে বলেও হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওই ছাত্রীর।
সর্বশেষ তিনদিন আগে গত ৩১ মে মোর্শেদ শাহরিয়ার ওই শিক্ষার্থীর ভাড়া বাসায় গিয়ে তাকে মারধর করে এবং তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশায় বাধ্য করে। মেলামেশার সেই দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। তাকে ডিভোর্স না দিলে ওইসব ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
অভিযোগের ব্যাপারে মোর্শেদ শাহরিয়ার বলেন, অভিযোগকারী তার সাবেক স্ত্রী। যদিও ফাঁদে পড়েই তাঁকে বিয়ে করেছিলো বলে দাবী করেছে।
তিনি আরো দাবী করেছে যে, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীর দ্বারা তিনিই উল্টো ব্ল্যাকমেইলিংইয়ের শিকার হয়েছে বারবার।
তিনি বলেন, “ এর আগেও নরসিংদীতে মেয়েটির আরেকটি বিয়ে হয়েছিল। সে এখন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেও না। তাছাড়া মেয়েটি ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সেবন করে।”
তিনি নিজে চোখের তাকে ইয়াবা সেবন করতে দেখেছেন বলেওঃ দাবী করেছে।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে মোর্শেদ শাহরিয়ার বলেন,“ আমি মেয়েটিকে তালাক দিয়েছি।”
সাংবাদিক নেতা মোর্শেদ শাহরিয়ার তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ের অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, তাতে অসুবিধা কি,যদি তাঁর স্ত্রীদের ভরণ পোষণের ক্ষমতা থাকে। ইসলামেও তো চারটি বিয়ের কথা আছে।
তাঁর বর্তমানে দুইটি স্ত্রী এবং চারটি সন্তান আছে বলে তিনি নিজেই স্বীকার করেছে।