হাবিবুল্লাহ্ মিজান,সম্পাদক,অল ক্রাইমস টিভি
বিআইডব্লিউটিসির নারায়াগঞ্জ ডকইয়ার্ডে কয়েক লক্ষ টাকার সরকারী মালামাল রহস্যজনকভাবে চুরি হলেও একটি ‘দুর্নীতিবাজ’ চক্র ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে অভিযোগ এসেছে।
টানা প্রায় দুই মাস সরকারী সাধারণ ছুটির পরে আজ রবিবার ( ৩১ শে মে) অফিস খুললেই ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।
বিআইডব্লিউটিসির জাহাজ টানার তামার তার এবং জেনারেটরসহ কয়েক লক্ষ টাকার সরকারী জিনিস চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান খাজা মিয়া ঘটনাটি শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের জনৈক নেতার কাছে থেকে আজ ঘটনাটি শুনেছেন বলে দাবী করেছেন।
তিনি আরো দাবি করেছেন, বিআইডব্লিউটিসিতে দুইটি বিবাদমান শ্রমিক ইউনিয়ন আছে। একটি মীর্জা গ্রুপ,আরেকটি মহসসীন গ্রুপ। এদের এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্বে প্রায়শই দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ করে।
তিনি চুরির ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ী ব্যাক্তিদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইডব্লিউটিসির একটি সূত্র জানিয়েছে সংস্থাটির একটি শক্তিশালী দুর্নীতিবাজ চক্রের যোগসাজশেই এই দুঃসাহসিক চুরি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের এই ডকইয়ার্ডে বিআইডব্লিউটিসির নিজস্ব তিনজন নিরাপত্তারক্ষী এবং সাথে সাতজন অস্রধারী আনসার সদস্য দায়িত্বরত থাকে সার্বক্ষনিকভাবে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড-২ এর ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম প্রথমে ঘটনাটি অস্বীকার করেন।
পরে ‘ছোটখাটো’ চুরি হয়েছে স্বীকার করে বলেন, আজ অফিস খোলার পরে জানতে পারি কিছু পুরাতন তার চুরি হয়েছে।
চুরি যাওয়া জিনিসপত্রের দাম জিজ্ঞেস করলে ডকইয়ার্ডের এই ম্যানেজার আরো বলেন, চার-পাঁচ হাজার টাকা হবে।
বিআইডব্লিউটিসির একটি আভ্যন্তরীণ সূত্র দাবী করেছে আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকার সরকারী মালামাল চুরি হয়েছে।
চুরি হওয়া এই জিনিসগুলোর এতো ওজন যে, সাত-আটজন লোক না থাকলে সরিয়ে নেয়া সম্ভবই না কোনভাবেই।
এই প্রতিবেদক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি দাবী করেন,আপনার কাছেই চুরির ঘটনার কথা প্রথম শুনলাম।
তিনি উল্টো এই প্রতিবেদকের কাছে জানতে চেয়েছেন, চুরির ঘটনাটি কবে ঘটেছে।
বিআইডব্লিউটিসির একটি চক্র ঘটনা ধাপাচাপা দেয়ার চেস্টা করার অংশ হিসাবে বিআইডব্লিউটিসির নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড-২ এর ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম এখনো পুলিশকে জানায়নি বলে অভিযোগ আছে।
ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,ঘটনার বিষয়ে আমি এখনো অবগত না। তবে সংশ্লিস্ট থানার ওসি হয়তো জানতে পারেন।
কিন্তু বন্দর থানার ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামও একই দাবি করে বলেন, তিনিও চুরির ঘটনা জানেন না। কেউ অভিযোগও করেনি পুলিশের কাছে।
কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানিয়েছে।
পুলিশকে চুরির ঘটনা না জানানোর অভিযোগের বিষয়ে নৌ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেন , সরকারী যে কোন জিনিস চুরির ঘটনা দ্রুত পুলিশকে জানাতে হয়। আমি এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে এখনই কথা বলছি।