বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্বজন ও আহতদের প্রশংসায় ভাসছেন রাজবাড়ী জেলার নবাগত ডিসি জাহিদুল ইসলাম

যোগদানের দুই দিনের মাথায় গেলেন শহীদের বাড়ী, তিন দিনের মাথায় দেখা করলেন আহতদের সাথে, দিলেন নগদ অর্থ সাহায্যও

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্বজন এবং আহতদের প্রশংসায় ভাসছেন রাজবাড়ী জেলার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্বজন এবং আহতদের প্রশংসায় ভাসছেন রাজবাড়ী জেলার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।

জেলা প্রশাসক হিসাবে যোগদানের মাত্র  দুই দিনের মাথায়  গতকাল সোমবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর নতুন বাজার এলাকায় শহীদ আব্দুল গণির  বাড়িতে গিয়ে শহীদের বিধবা স্ত্রী লাকী আক্তার, শিশু সন্তান জান্নাত আক্তারের সাথে দেখা করেন। উপহার দেন নতুন পোশাক উপহার। এছাড়া শহীদ গণির পরিবারের সদস্যদের জন্যও নিয়ে যান বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ফল ও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী।

আজ মঙ্গলবার আবার অফিসে চরম ব্যস্ততার মাঝেও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহত  দুইজনকে অফিসে ডেকে আনেন। তাঁদের অসুস্থতার খোঁজ খবর নেন। তাঁদের দুর্ভোগের কথা মনযোগ সহকারে শুনেন। জেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাসও দেন।

আহত রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার ধুলিয়াট গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলামের পুত্র শিক্ষার্থী রাজীব খানের গায়ে ৪৮ টি গুলি লেগেছিল। এখনো তাঁর শরীরে ৮ টি গুলি রয়ে গেছে।

ডিসি অফিস থেকে বের হয়ে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ডিসি স্যারের ব্যবহার অনেক অমায়িক। অফিসে যোগ দিয়েই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের পরিবার ও আহদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন নিজের বিবেকের তাগিদে।

অনেক অনেক ব্যাস্ততার মাঝেও আজ আমার সব কথাগুলো শুনেছেন ডিসি স্যার।

সরকারের তরফ থেকে সাধ্যমতো সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন আমাকে, যোগ করেন আহত শিক্ষার্থী রাজীব।

রাজিব ৪ ঠা আগস্ট ফরিদপুরের জনতা ব্যাংকের মোড়ে গুলিতে আহত হন।

জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার নলডুপি গ্রামের আব্দুল হক শেখের ছেলে গার্মেন্টস শ্রমিক আমির হামজাকেও অফিসে ডেকে এনেছিলেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল।

তিনিও সাংবাদিকদের কাছে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে হাউ মাউ করে  কেঁদে ফেললেন।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমি আমার ডান চোখ হারিয়েছি সারাজীবনের জন্য। কিন্তু আগে তেমন কেউ খবরও নেন নাই আমার,অভিযোগ আমির হামজার।

এখনো আমি পুরোপরি সুস্থ না হওয়ায় কোন কাজ করতে পারছি না। জীবন নিয়ে অনেক হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু আজ ডিসি স্যারের সাথে সাক্ষাতের পরে মনে আশার সঞ্চার হয়েছে, যোগ করেন তিনি।

আমির হামজা বলেন, এমন ডিসি স্যার যদি বাংলাদেশে সব জেলায় থাকতো,তাহলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের অনেক উপকার হতো।

ডিসি স্যার আমাদেরকে সরকারী তহবিল হতে প্রাপ্য সব ধরনের অনুদান দ্রুত এনে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

আসার সময় বলে দিয়েছেন যে কোন সমস্যা হলে তাঁকে সরাসরি জানাতে। ডিসি স্যারের দরজা আমাদের জন্য সব সময় খোলা থাকবে বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে আহত গার্মেন্টস কর্মী  আমির হামজা ও রাজীব খানকে আজ  জেলা সমাজ কল্যাণ কমিটির তহবিল হতে অর্থ সহায়তা বাবদ জনপ্রতি ১০,০০০/- টাকার চেক দেয়া হয়েছে।

এসময়   উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) সিদ্ধার্থ ভৌমিক এবং  জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস।