নিজস্ব প্রতিবেদক;
টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে থানা হাজতে তিনদিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তিনি জোর করে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী মো. ফরিদ মিয়া।
এ ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ জানানোর পর থেকে পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন ফরিদ মিয়া। শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে(ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ১৩ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় এসপি স্যারের বাসায় কাজ শুরু করি এবং বেলা ১টার দিকে কাজ শেষ করে ফিরে আসি। এরপর বিকাল ৪টার দিকে এসপি স্যারের অর্ডারলি কনস্টেবল সাহেব আলী আমাকে ফোন নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে স্যারের বাংলোতে আসতে বলে। বাংলোতে পৌঁছালে আমাকে এসপি স্যার তার বাংলোর দোতালার পূর্ব পাশের রুমে ঢুকিয়ে দরজা আটকিয়ে দেন। তারপর আমাকে বলেন, তুই এই কাজ কতদিন ধরে করিস? আমি অবাক হয়ে বলি, কোন কাজ স্যার? এরপরই স্যার আমাকে বেধড়ক মারপিট, লাথি মারতে শুরু করেন। তারপর তিনি বলেন, তার ১ লাখ টাকা চুরি হয়েছে এবং এই টাকা আমি চুরি করেছি। আমি অস্বীকার করলে তিনি আমাকে আরো মারধর করেন।
এরপর তিনি থানায় খবর দিলে আনুমানিক বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে পুলিশ এর এসআই মো. আবুল বাশার মোল্লা এসে আমাকে বাংলোতেই জেরা করে এবং মারধর করে। এরপর এসআই আবুল বাশার মোল্লা এবং আরেকজন পুলিশ সিএনজিতে করে আমাকে মির্জাপুর থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে আমার চোখ এবং হাত পা বেঁধে পেটাতে থাকে। এভাবে ৩ দিন থানা হাজতে রাখার পর ১৫ মার্চ আনুমানিক বিকাল ৫ টায় এসআই বাশার আমাকে মির্জাপুর থানা থেকে পিটিসি, টাঙ্গাইলের একাডেমিক ভবনে এসপি’র রুমে নিয়ে যায়। সেখানে আমার মামা আনোয়োর হোসেন, ভাবি রেখা বেগম, স্ত্রী মুক্তা, বাবা ইসমাইল হোসেন, চাচা নিয়ত আলী উপস্থিত থেকে ৭০ হাজার টাকা এসআই বাশারের উপস্থিতিতে এসপি’র হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারপর আমাকে ছেড়ে দেয়।
এসপি’র বাংলো থেকে টাকা চুরির সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে ফরিদ মিয়া বলেন, আমি চুরি করিনি। আমার কাছ থেকে জোর করে টাকা নিয়েছে। ক্ষমতার জোরে সব করছে। আমি পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ করেছি। এরপর থেকে এসপি ও এসআই বাশারের লোকজন নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমি ন্যায় বিচার চাই। আমি চুরি না করে অপবাদ নিয়ে বাঁচতে চাই না।