ফেসবুকে বিদেশি বন্ধু সেজে প্রতারণা, আটক ১২


নিজস্ব প্রতিবেদক;

ফেসবুকে পরিচয়, অন্তরঙ্গতা ও বন্ধুত্ব, এরপরই শুরু প্রতারণা। প্রথমে বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব করে। পরে তাদের মেসেঞ্জারে একসময় গিফট পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। গিফটের এয়ারলাইন্স বুকিং-এর ডকুমেন্টস পাঠায়। সেখানে কয়েক মিলিয়ন ডলারের গিফট আছে বলে জানান তারা। এরকম পর্যায়ে গ্রেপ্তারকৃত নারী প্রতারক রাহাত আরা নিজেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস এর কমিশনার পরিচয় দিয়ে গিফট রিসিভ করতে কয়েক লাখ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে বলে। না হলে ভিকটিমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুমকি দেয়। এজন্য কয়েকটি ব্যাংকের একাউন্ট নাম্বার দেয়া হয়। ভয়ে ভিকটিম এসব একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। এভাবেই গত দুই মাসে তারা অনেক মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৫-৬ কোটি টাকা।

বুধবার সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির এডিশনাল ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।
এর আগে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগে এক বাংলাদেশী নারীসহ ১২ বিদেশী নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- নন্দিকা ক্লিনেন্ট, ক্লেটাস আছুনা, ওইউকুলভ টিমটি, একিন উইসডোম, চিগোই, ইভুন্ডে গ্যাব্রিল ওবিনা, স্যালেস্টাইন প্যাট্রিক, ডুবুওকন সোমায়ইনা, ইয়েরেম প্রেসিওস, ওক উইসডম, মর্দি ন্যামডি এবং বাংলাদেশি রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন।

সিআইডির এডিশনাল ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে গত দুই মাসে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত এসব বিদেশীরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করলেও তাদের পাসপোর্ট বা বৈধ কোন কাগজ নেই।

তাদের সাথে গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশী নারীর নাম রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন। তিনি নিজেকে কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এসব বিদেশীদের সঙ্গে মিলে প্রতারণা করে আসছিলো। গ্রেপ্তারকৃত বিদেশীরা সবাই আফ্রিকান নাগরিক।

সংবাদ সম্মেলনে পরামর্শ দেয়া হয়, অপরিচিত কারো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট না করতে। বাড়িওয়ালাদের বিদেশী নাগরিকদের ভাড়া দেয়ার পূর্বে তাদের কাগজপত্র যাচাই করে নিতেও বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সিআইডির ঢাকা মেট্রোর (পশ্চিম) বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা এবং অর্গানাইজড ক্রাইমের জ্যৈষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জিসানুল হক।