সুন্দরী নারী চক্রের কোটি কোটি টাকার অভিনব প্রতারণা

প্রতারক চক্রটি আরো অনেক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ

নদী খননের ড্রেজিং মেশিন আমদানী করার নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক ঠিকাদারে কাছে থেকে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ এসেছে এম এম এহসান নিজামী ওরফে তানিম ও ফাহমিদা খাতুন নামের দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্বে

হাবিবুল্লাহ মিজান,সম্পাদক, অল ক্রাইমস টিভি

নদী খননের ড্রেজিং মেশিন আমদানী করার নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক ঠিকাদারে কাছে থেকে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ এসেছে এম এম এহসান নিজামী ওরফে তানিম ও ফাহমিদা খাতুন পলি নামের দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

এই ঘটনায় রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেছেন মো. আবু সাদেক নামের এক ঠিকাদার। নদী খননের কাজ পেয়েও ফাস্ট এস এস ইন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড নামের দেশীয় কোম্পানীটি ড্রেজিং মেশিন না থাকায় কাজ করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডে দুইটি ও নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ে এই কোম্পানীর তিনটি কাজ চলমান রয়েছে মুন্সিগঞ্জ মাওয়া এলাকায়। এছাড়া টাঙ্গাইলের একটি নদী খননের কাজের আদেশও কোম্পানীটি পেয়েছে।

জানা গেছে, ফাস্ট এস এস ইন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড নামের কোম্পনী দীর্ঘ দিন ধরে দেশে ড্রেজিং ব্যবসা করে আসছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডেও বেশ কিছু ড্রেজিংয়ের ঠিকাদারি কাজ হাতে থাকায় তাঁদের নতুন একটি ড্রেজিং মেশিন ক্রয় করার প্রয়োজন দেখা দেয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে লীজ ফিন্যান্স টার্মে ২২ কোটি টাকা মূল্যেও একটি ড্রেজিং মেশিন আমদানী করার জন্য এলসি খোলার চেষ্টা করে কোম্পানীটি। কিন্তু কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বল্প মার্জিনে এলসি খুলতে রাজী না হওয়ায় ড্রেজিং মেশিন আমদানীর চেস্টা স্থবির হয়ে পড়ে। আবু সাদেকের সাথে ব্যবসায়িকভাবে পরিচিত চন্দ্র শেখর বড়ুয়া নামের এক ব্যবসায়ী এই অবস্থা দেখে তাঁকে জানান এম এম এহসান নিজামী ওরফে তানিম নামে এক জন বড় ব্যবসায়ীর সাথে তার পরিচয় আছে এবং সে ড্রেজিং মেশিন বিদেশ থেকে এনে আনতে পারবেন। রাজধানীর গুলশানের ইএফই(এসজি) লিমিডেট সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশে নামে তাঁদের একটি লিয়াজো অফিস রয়েছে।

ইএফজি লিমিটেড সিঙ্গাপুরের মাধ্যমে বাংলাদেশে বহু বিনিয়োগ এনেছেও বলে জানানো হয়।

প্রতারিত আবু সাদেক বলেন, আমার মতো তারা বহু ছোট ছোট ব্যবসায়ীকে মেশিনারিজ আমদানী ও রপ্তানি ক্যাপিটাল লোনের ব্যবস্থা করে থাকেন বলে প্রতারক চক্র দাবী করেছিল।

তাকে আরো জানানো হয় যে, বিদেশী বিনিয়োগের মাধ্যমে তাঁরা ড্রেজিং ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। সে কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শেষ সপ্তাহে রাজধানীর গুলশান অফিসে সাদেকের সাথে একটি বৈঠক হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের জন্য ড্রেজিং মেশিনের আমদানী মূল্যের মাত্র ২০ শতাংশ টাকা (১০ শতাংশ টাকা এলসি খোলার পূর্বে এবং বাকী ১০ শতাংশ এলসি ডকুমেন্টস মেশিন আসার পরে) প্রদান করতে হবে আবু সাদেককে জানানো হয়। বাকী ৮০ শতাংশ টাকা উক্ত সিঙ্গাপুরের কোম্পানী এসজি লিমিটেড পরিশোধ করবে বলে প্রতারক চক্র জানিয়েছিলে। সিংগাপুর থেকে এলসি খুলে চীন থেকে ড্রেজিং মেশিন আমদানী করে বাংলাদেশে আবু সাদেকের কোম্পানীর ঠিকানায় সরবরাহ করার কথা ছিল। সিঙ্গাপুরের ইএফই (এসজি) লিমিটেড কোম্পানী কর্তৃক ৮০ ভাগ টাকা বাংলাদেশী কোম্পানীকে পরবর্তীতে ৫ বছরের নিদিষ্ট কিস্তিতে সুদসহ পরিশোধ করতে হবে বলে জানানো হয়েছিল। প্রতারক চক্র বলেছিল, সিংগাপুরের কোম্পানীর বিনিযোগকৃত ৮০ ভাগ টাকার গ্যারান্টি হিসেবে বিন্টাং লারিস ট্রেড এন্ড ম্যানেজমেন্ট, এসডিএন বিএইচডি কর্পোরট গ্যারান্টি প্রদান করবে। সে হিসেব তাদেও মধ্যে একটি চুক্তি ক রা হয়। পরে জেভি কোম্পানীর একাউন্টে ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা জমা দেয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে আগামী দুই একদিনের মধ্যেই মামলাটি পুলিশের অন্য কোন সংস্থায় হস্তান্তর হতে পারে।

মামলার বাদী নিজেও সোমবার রাতে অল ক্রাইমস টিভিকে জানিয়েছে যে, তিনিও মামলাটি ঢাকা মহানগর পুলিশের অন্য কোন ইউনিটে হস্তান্তর করতে আবেদন করেছেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রতারক চক্রটি আরো অনেক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে মামলার এজহারভুক্ত দুই আসামী এম এম এহসান নিজামী ওরফে তানিম ও ফাহমিদা খাতুন পলি নিজেদের নির্দোষ দাবী করে বলেন,তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি ভিত্তিহীন।