স্বাস্থ্য খাতের সাবেক এবং বর্তমান কর্মকর্তাদের উপর বিশেষ নজরদারি

দীর্ঘদিন ধরে পরিচালকের পদে দায়িত্ব পালন করা কিছু কর্মকর্তা টাকার কুমির বনে গেছেন, দুর্নীতির মাধ্যমে তাঁদের অর্জিত এই সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে  

স্বাস্থ্য খাতের সাবেক এবং বর্তমান কর্মকর্তাদের উপর বিশেষ নজরদারি

বিশেষ প্রতিবেদক

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন হাসপাতালের সাবেক এবং বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইতোমধ্যে কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের সাবেক এবং বর্তমান পরিচালকের সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ হাতে পেয়েছে সংস্থাগুলো।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি রিজেন্ট হাসপাতাল এবং জেকেজি’র নানান কেলেংকারি সাথে স্বাস্থ্য খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশের বিষয়টি উঠে আসলে এব্যাপারে নড়েচড়ে বসে সংস্থাগুলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বলেন, সরকারি-বেসরকারি অনেকগুলো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য উপাত্ত আমাদের হাতে এসেছে। এর মধ্যে কয়েকটি হাসপাতালের সাবেক পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক, উপ-পরিচালকের ব্যাপারে কেনাকাটায় অনিয়ম, ঘুষ গ্রহণ, অর্থ আত্মসাত, এবং অবৈধ সু্যোগ-সুবিধা ভোগ করার প্রমাণও আমরা পেয়েছি। বিশেষ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মিটফোর্ড), জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট, ক্যান্সার হাসপাতালের কয়েকজন সাবেক পরিচালক সরকারি চাকরি বিধি লংঘন করে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য এবং ঠিকাদারদের সাথে কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত সহ ব্যাপক লোটপাট করেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছি আমরা।

বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন হাসপাতালের সাবেক পরিচালকদের কেউ কেউ দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অর্জনের প্রাথমিক তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে। বিশেষ করে টানা আট-দশ বছর ধরে পরিচালকের পদে দায়িত্ব পালন করা এমন কিছু কর্মকর্তা টাকার কুমির বনে গেছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে তাঁদের অর্জিত এই সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব ভট্টাচার্য জানান, আমরা লিখিত চিঠির মাধ্যমে স্বাস্থ্যের অনেক সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাকে ডেকেছি জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্য জানার জন্য করার জন্য। আবার কারো কারো ব্যাপারে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়ে মামলাও দায়ের করেছে দুদক। কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী সাবেক হয়ে গেলে উনার দুর্নীতি ধামাচাপা পড়ে যাবে এমনটি ধারণা করা ভুল। সন্দিগ্ধ সবার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ সহ জিজ্ঞাসাবাদ চলমান থাকবে। শুধু কর্মকর্তা নন, কর্মচারীদের বিষয়েও আমাদের নজরদারি থাকবে।