অবশেষে বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন বিতর্কিত সাবেক প্রকল্প পরিচালক ডঃ মোঃ আমিরুল ইসলাম!

বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু

অবশেষে বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন বিতর্কিত সাবেক প্রকল্প পরিচালক ডঃ মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম!

হাবিবুল্লাহ মিজান

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন সাবেক প্রকল্প পরিচালক ডঃ মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামের বিরুদ্বে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব ( পরিকল্পনা-৩) মোহাম্মদ  রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি সরকারী নথি থেকে এটি জানা গেছে। অল ক্রাইমস টিভির কাছে এই নথি সংরক্ষিত আছে।

গত ৩০ শে সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বলা হয়েছে “ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিভাগ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির নিকট থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত প্রকল্প পরিচালক শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা ডঃ আমিরুল ইসলাম ( আইডি নং- ০০০১০৭৬১) এর বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম শুরু করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।”

এই চিঠির সাথে ৭৬ পাতার সংযুক্তি দেয়া হয়েছে। বিশস্ত সূত্র জানিয়েছে যে,এই চিঠি শিক্ষা মন্ত্রানালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কলেজ শাখার অতিরিক্ত সচিবকে দেয়া হয়েছে।

চিঠির অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, শিক্ষা মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব এবং উপমন্ত্রীর একান্ত সচিবকেও দেয়া হয়েছে। এর আগে ২৯ শে সেপ্টেম্বর প্রকল্প পরিচালক ডঃ মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামকে প্রকল্প থেকে সরিয়ে ওএসডি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য,এই প্রকল্প নিয়ে ‘মহা-দুর্নীতির’ প্রচেষ্টা নিয়ে এই প্রতিবেদক প্রথম আট পর্বের সিরিজ রিপোর্ট করেছিল। পরে বাংলাদেশে অনেক গনমাধ্যমও প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামের দুর্নীতি নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করেছিল। পরে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এই বিষয়ে তদন্তে নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে।

এরপর একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ১০ স্কুল নির্মাণসংশ্লিষ্ট প্রস্তাবিত এলাকায় সরেজমিন অনুসন্ধানে নামে। এর মধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরকারের প্রায় ৪৮০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে নীলনকশা করা হয়। দুর্নীতি করতে গিয়ে আলোচিত এই প্রকল্পের জমিতে থাকা একটি কড়ই গাছের ক্ষতিপূরণ ধরা হয়েছে ৪ কোটি টাকা। একটি নারকেল গাছের দাম ধরা হয় প্রায় কোটি টাকা। এছাড়া একটি টিনসেডের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাম ধরা হয় ২ কোটি টাকা। চাঞ্চল্যকর এই দুর্নীতির ক্ষেত্র প্রস্তুতকারী প্রকল্প পরিচালক ড. আমিরুল ইসলাম রহস্যজনক কারণে এতদিন বহাল তবিয়তে ছিলেন।

সরকারের উচ্চমহল গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই তার বিরুদ্বে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্বান্ত এলো।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা জেলার নবীনগরের পাথালিয়া, আশুলিয়ার বাইপাইল, ধামরাই উপজেলার গাওয়াইল, হোমায়েতপুরের বিলামালিয়া, জোয়ারসাহারা, সাতারকুল ও কেরানীগঞ্জের পশ্চিমদী এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার পূর্বাচলের ১৭ নম্বর প্লট, সাইনবোর্ড এলাকার জালকুড়ী এবং চিটাগাং রোডের খোদ্দঘোষপাড়া এলাকায় মোট ১০ টি হাই স্কুল স্থাপন করা হবে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা ( ডিপিপি) অনুযায়ী, প্রতিটি বিদ্যালয় ভবন হবে ১০ তলা।