অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর : ওবায়দুল কাদের


ডেস্ক রিপোর্ট;

স্বাস্থ্যখাতসহ সকল খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘আমি আরও মনে করিয়ে দিতে চাই, শেখ হাসিনা সরকার কোন অন্যায়কারীকে ছাড় দেয়নি, দিবেও না। অপরাধীর কোন দল নেই। অপরাধ লুকাতে তারা দলের আলখেল্লা পরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারে না। দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকার সবসময় কঠোর অবস্থানে।’

ওবায়দুল কাদের আজ রোববার সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক আনলাইন ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ সকল অপরাধদের পাকড়াও অভিযান শেখ হাসিনা সরকার নিজ উদ্যোগেই নিয়েছে। স্বাস্থ্যখাত এবং অন্যান্য খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মকারীদের সাবধান করে দিয়ে বলছি, কেউ ছাড় পাবেন না। দুর্নীতি যেখানেই হবে, সেখানেই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের স্বাধীনতা দুদকের রয়েছে। এমনকি আমার নিজের মন্ত্রনালয়েও যে কোন দুর্নীতি বা অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে দুদকের প্রতি কোন বাধা নেই।’

‘জনগণের জীবন জীবিকার উপর সরকার দায়িত্ব পালন করছে না’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যর জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, জীবন জীবিকা সচল রাখতে শেখ হাসিনা সরকার যখন নানামুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তখন আপনারা সমালোচনা করেছিলেন কেন? লকডাউনের জন্য চাপ তৈরি করে এখন তিনি জনগণের জীবন জীবিকার কথা বলছেন। বিএনপির সুবিধাবাদী রাজনৈতিক চরিত্র এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ইতোমধ্যে জনগণের কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারের অবহেলা আর অজ্ঞতার কারণে না কি পরিস্থিতি এমন হয়েছে, আমি জানতে চাই, করোনাভাইরাসের মহামারিতে বিশ্বের কোন দেশ বিদ্যমান সুবিধা দিয়ে সফলতা পেয়েছে? কোন দেশ হিমশিম খায়নি? সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে জনগণকে সাথে নিয়ে সংকট মোকাবিলার।’

তিনি বলেন,‘আপনারা তো বলেছিলেন, রাস্তায়-রাস্তায় মানুষ মরে পড়ে থাকবে, সেটি হয়নি, বলে কি আপনাদের গাত্রদাহ? সরকার সীমাবদ্ধতা সত্তেও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করছে। আপনারা বিষোধগার ছাড়া এই সংকটে কি করেছেন? সরকারকে কি সহযোগিতা দিয়েছেন জনকল্যাণে?’

বিএনপি দুর্নীতির লালন, সৃজন, সংক্রমণ ও বিকাশ ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধরণ সম্পাদক বলেন, ‘যাদের সময় দেশ দুর্নীতির অতলে ছিল, দুর্নীতিবাজদের ছিল অভয়ারণ্য যারা নিজেদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বিলুপ্ত করে দুর্নীতিবাজদের দলের নেতৃত্বে এনেছেন, আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছেন ক্ষমতায় থাকতে কখনোই দুর্নীতির বিচার করেননি, তাদের মুখে দুর্নীতির কথা ‘ভুতের মুখে রাম নাম।’
করোনা পরীক্ষায় বেসরকারী রিজেন্ট হাসপাতাল ও জিকেজির প্রতারণার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনার পরীক্ষায় স¤প্রতি দু’টি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা মানুষকে বিস্মিত করেছে। মানুষের জীবন-মরণ, মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা কিংবা অসুস্থতা নিয়ে এমন প্রতারণা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। দ্রুততার সাথে তদন্তপূর্বক অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
অনলাইনে কোরবানির পশু কেনা-বেচার ক্ষেত্রে লেনদেনে স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কেউ যেন প্রতারণার স্বীকার না হয় এর জন্য বিশেষ নজরদারি রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে যেহেতু কেনা বেচায় বড় আকারের লেনদেনের বিষয়টি জড়িত, তাই মনিটরিং করতে হবে যাতে করে ক্রেতা বা বিক্রেতা কোন ভাবেই প্রতারণার শিকার না হয়। অনলাইনে বাজার বিশ্বাস ও আস্থার উপর নির্ভরশীল। সে কারণে বেচা কেনা সহজতর এবং ক্রেতা বিক্রেতা বান্ধব করতে হবে। লেনদেন স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরী।’

সড়ক মহাসড়কের পাশে পশুর হাট না বসানোর নির্দেশনা দিয়ে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যত্রতত্র পশুর হাট বসানো যাবে না। সড়ক মহাসড়ক কিংবা পাশে অনুমতি দেয়া যাবে না। কেনা বেচায় কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে। পশুর হাট সংখ্যায় কমিয়ে আনলে কেনা বেচায় বাড়তি চাপ তৈরি হবে। এই বাড়তি চাপ মোকবিলায় ডিজিটাল প্লাটফর্ম হতে পারে বিকল্প। তাই অনলাইনে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় জনপ্রিয় করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

সরকার ত্রিমূখী চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগুচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একদিকে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি, অপরদিকে বন্যা তার পাশাপাশি কোরবানির পশুরহাট। ত্রিমূখী চ্যালেঞ্জ নিয়ে সরকার জনমানুষের জন্য কাজ করছে। জীবন-জীবিকার পাশাপাশি মানুষের সুরক্ষায় গ্রহণ করছে নানামূখী পদক্ষেপ। প্রতিদিন অসহায় কর্মহীন মানুষ ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাওয়ার ছবি আসছে পত্রিকার পাতায়। জাতীয় জীবনে এমন চ্যালেঞ্জিং সময়ে আমাদের প্রয়োজন পারস্পরিক শেয়ারিং এবং কেয়ারিং। আমরা একে অপরের প্রতি সহমর্মী হলে প্রতিবেশির প্রতি আন্তরিক হলে নিশ্চই অমানিশার আঁধার কেটে যাবে।